অ্যালোভেরা জেল তৈরি নিয়ম এই বিষয়ে আজকে আমরা জেনে নিব। ত্বকে সৌন্দর্য ও ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখতে আমরা সবাই চাই। আমরা অনেকেই অনেক ধরনের প্রসাধনই অথবা প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি। তবে সাধারণত বাজার থেকে যে প্রসাধনই বা প্রোডাক্ট আমরা কিনে ব্যবহার করে থাকি। সেগুলোতে প্রায়ই কেমিক্যাল সহ আরো অনেক ক্ষতিকর জিনিস থাকে।
আর এই বাজারের প্রসাধ্বনিগুলো যদি আমরা ত্বকের সৌন্দর্য্য ও মসৃণতার জন্য যদি দীর্ঘদিন ব্যবহার করে থাকি। তাহলে একপর্যায়ে এর কারণে ত্বকে স্কিনে ক্ষতি হতে পারে। তাই আজকে আপনাদের জানাবো যে কিভাবে প্রাকৃতিক উপায় ও ঘরোয়া উপায়ে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। আর আপনি এলোভেরা জেল তৈরির নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আশা করি আজকে আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা খুবই অল্পতে খুবই সহজে এলোভেরা জেল তৈরির নিয়ম ও কিভাবে তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবেই জানতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক অ্যালোভেরা জেল তৈরির নিয়ম সম্পর্কে-
অ্যালোভেরা জেল তৈরির নিয়ম।
অ্যালোভেরা জেল তৈরির নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
প্রথমে জেনে নি ই অ্যালোভেরা জেল তৈরি করতে কি কি উপকরণ দরকার। অ্যালোভেরা জেল তৈরি করতে কি কি উপকরণ লাগবে নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো।
- অ্যালোভেরা গাছ থেকে দুটি অ্যালোভেরা পাতা নিবেন।
- অরিজিনাল খাঁটি মধু , এক চামচ।
- ভিটামিন সি ক্যাপসুল দুটি।
# তাহলে জেনে নিই উপরে দেওয়া উপকরণ দিয়ে কিভাবে তৈরি করতে হবে অ্যালোভেরা জেল।
- প্রথমে একটা বাটি নিতে হবে, অ্যালোভেরা জেলের পাতাটা একটি ছুড়ির সাহায্যে পাতার উপরের অংশ আস্তে করে ফেলে দিতে হবে।
- তারপর ছুরি অথবা একটি কাটা চামচের সাহায্যে আস্তে আস্তে করে জেলটা সুন্দরভাবে বের করে নিতে হবে। কাটা চামচ অ্যালোভেরা জেলের উপরে আস্তে আস্তে আচর কাটতে থাকবেন। দেখবেন অ্যালোভেরা পাতায় থাকা জেলগুলো আলাদা হয়ে বাটিতে পড়বে। ঠিক এভাবেই এলোভেরা জেল পাতা থেকে আলাদা করে বাটিতে রাখবেন।
- বাটিতে রাখা অ্যালোভেরা জেলের সাথে দুই চামচ খাঁটি মধু এড করবেন
- তারপর ভিটামিন সি ক্যাপসুল একটি পিনের সাহায্যে ক্যাপসুলের এক পাশ থেকে একটু ছিদ্র করে নিবেন। তারপর ক্যাপসুলের ভিতরে থাকা অংশটুকু চেপে বাটিতে ঢালবেন।
- তার সাথে অলিভ অয়েল বাটিতে রাখা অন্য সব মিশ্রণের সাথে এড করে নিবেন।
#সবগুলো বাটিতে ঢালার পর এগুলো একটি কাটা চামচের সাহায্যে ভালো করে মিক্স করবেন। প্রায় সাত থেকে বারো মিনিটের মতো মিক্স করতে থাকবেন। ব্যাস এভাবেই খুব সহজেই আপনি তৈরি করে ফেলেন অ্যালোভেরা জেল। তারপর এটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেল সংরক্ষণের উপায়।
এরপর একটা ফ্রেশ হারি অথবা ছোট কড়াইতে বাটিতে থাকা অ্যালোভেরা জেল মিশ্রণ করাইতে ঢালবেন। ঢেলে গ্যাসের চুলের উপরে দিবেন। অবশ্যই চুলা আছ্ একদম লোতে রাখবেন। লতে এরকম রেখে নাড়তে থাকুন খুবই ভালোভাবে যাতে নিচে লেগে না যায়। এরকম প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত নাড়তে থাকবেন।
তারপর যখন দেখবেন একপর্যায়ে আপনার শক্ত হয়ে এসেছে সবকিছু খুব ভালোভাবে মিশ্রণ হয়েছে। ও কালারের পরিবর্তন এসেছে। তখন বুঝবেন যে আপনার এলোভেরা জেল সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেছে। তারপর এটি ঠান্ডা করে আপনি আপনার মুখে , হাত পায়ে , ঠোঁটে সহ সব জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই ভাবে অ্যালোভেরা জেল সংরক্ষণ করেও রাখতে পারেন।
অ্যালোভেরা দিয়ে চুলের যত্ন।
অ্যালোভেরা দিয়ে চুলের যত্ন কিভাবে করবেন সেই বিষয়ে জেনে নিন। এলোভেরা জেল অনেক পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। যেটা বাজারে পাওয়া কোন প্রসাধনীতে নেই। তাই আপনি যদি নিয়মিত চুলে এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই আপনার চুল অনেক ভালো মজবুত ও পুষ্টি গুণাগুণ বাড়বে।
# এলোভেরা দিয়ে চুলের যত্ন নিতে কি কি প্রয়োজন।
প্রথমে একটা এলোভেরা পাতা নিয়ে তার থেকে এলোভেরা জেল বের করে একটা বাটিতে রাখতে হবে। তার সাথে এক চামচ টক দই দিতে হবে। এক চামচ মধু। এক চামচ অলিভ অয়েল, এখানে যদি আপনার অলিভ অয়েল না থাকে তাহলে আপনি সাধারণ নারকেল তেলও এড করতে পারেন। তার সাথে সামান্য পরিমাণে গরুর কাঁচা দুধ এড করুন।
প্রত্যেকটি উপকরণ একটি চামচের সাহায্যে ভালোভাবে মিক্স করুন। মিক্স করার পর এটি আপনার চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এলোভেরা জেল টি যখন চুলে আপনি লাগাবেন। তখন অল্প অল্প করে চুল নিয়ে, মাথায় বিলে কেটে কেটে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন।
চুলের যত্নের জন্য এলোভেরা জেল লাগানোর পর। চুলগুলো ভালোভাবে বেঁধে ফেলবেন। তারপর প্রায় এক ঘন্টার মতো অ্যালোভেরা জেল মাথায় লাগিয়ে রাখবেন। এক ঘন্টা হয়ে যাবার পর খুব সুন্দরভাবে পানি দিয়ে অ্যালোভেরা জেল ধুয়ে ফেলবেন। তবে বলিনি অ্যালোভেরা জেল মাথা থেকে ধুয়ে ফালানোর পর কোন শ্যাম্পু বা সাবান ব্যবহার করবেন না। অ্যালোভেরা জেল চুলে লাগানোর পরের দিন আপনি মাথায় শ্যাম্পু দিবেন।
প্রতি সপ্তায় আপনি যদি এভাবে চুলের যত্নের জন্য এলোভেরা জেল ব্যবহার করেন। তাহলে অবশ্যই আপনার চুল অনেক সুন্দর হবে। চুল পড়া বন্ধ হবে, চুলের আগা ফাটা কমে যাবে, চুল ভেঙে যাবে না, ও আস্তে আস্তে আপনার চুল সিল্কি ও শাইনিং হবে।
অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম।
অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম হল। আপনি একটি এলোভেরা পাতা নেন। তার থেকে অ্যালোভেরা জেল টা খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করে নিন। তার সাথে এক চামচ চালের গুড়া। এক চামচ গরুর কাটা দুধ, এক চামচ মধু , এগুলো ভালোভাবে।
সবগুলো ভালোভাবে মিক্স হলে। আপনার মুখটি আগে সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। তারপর একটা টাল বা গাম তার মাধ্যমে মুখটি মুছে নিন। তারপরে বাটিতে রাখা এলোভেরা জেলগুলো আপনার মুখে দু হাত দিয়ে লাগিয়ে নিন।
দু হাত দিয়ে ভালোভাবে লাগিয়ে প্রায় পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মতো খুব সুন্দর ভাবে ম্যাসাজ করে নিন। এভাবে ৫ থেকে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করার পর দেখবেন যে একটা আঠালো ভাব চলে এসেছে আপনার মুখে। তারপর আপনার মুখটি পানি দিয়ে সুন্দরভাবে ধুয়ে ফেলুন।
ভালোভাবে মুখ ধোয়ার পর। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা পানি অথবা বড় আপনার মুখে লাগিয়ে নিন। আরে এই এলোভেরা জেলের ফেসপ্যাক টি লাগানোর পর। আপনি আপনার মুখ সাবান দিয়ে ধুবেন না এবং কোন ধরনের ক্রিমও মুখের সেদিন ব্যবহার করবেন না। পরের দিন সকালে আপনি ফেসওয়াশ অথবা সাবান দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে। ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
প্রিয় পাঠক আশা করি আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এলোভেরা জেল তৈরির নিয়ম সহ এলোভেরা জেলের ফেসপ্যাক কিভাবে তৈরি করতে হয় এইসব বিষয়ে বিস্তারিত আপনাদেরকে জানাতে পেরেছি। আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ-