পানিবাহিত রোগের দুটি কারণ উল্লেখ করা হলো আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে। পানিবাহিত রোগ গুলো হল সেই সব রোগ যা জীবাণু ও দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায়। অথবা সেই পানি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার ফলে যে সব ধরনের ব্যাধি সংক্রামিত হয় তাকে পানি বাহিত রোগ বলা হয়ে থাকে।
পানিবাহিত রোগের দুটি কারণ সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
পানিবাহিত রোগ সংক্রমণের মূল কারণগুলো হলো।
১ দূষিত পানি এবং ২দুর্বল পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা। কারণ বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগের ও বেশি মানুষ গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে থাকে। গ্রাম গুলোতে ভালো কোন পয়োনষ্কাশন ব্যবস্থা ও নিরাপদ পানি অভাব রয়েছে।
গ্রামের অধিকাংশ মানুষই জলাশয় গোসল করে থাকে। কাপড় ধোঁয়া এবং গবাদি পশু গোসল করেন, সেই একই জলাশয় এর পানি পান করে এবং রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকে তারা। বেশিরভাগ এর ফলে দূষিত পানি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে পানিবাহিত রোগ ছড়ায়।
শহরে সাধারণত পয়োনষ্কাশন এর ব্যবস্থা আছে। তবে সেসব ব্যবস্থা সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ না। তবে যদিও শহরে অধিবাসীদের পানি সরবরাহ করা হয় নিরাপদ উপায়ে। কিন্তু পয়নিষ্কাশন নিম্নমানের রক্ষণাবেক্ষণের কারণেই প্রায় এই পানি সরবরাহ এর সময় দূষিত হয়ে যায়। যে কারণে আমরা শহরে অধিকাংশ মানুষই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
পানিবাহিত রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় জেনে নিন।
পানি বাহিত রোগ যদি আপনি প্রতিরোধ করতে চান তাহলে জেনে নিন কি কি নিয়মে পানি বাহিত রোগ প্রতিরোধ করবেন।
১ কাঁচা ও আধা সেদ্ধ খাবার খাওয়া যাবেনা।
২ সব সময় বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। আর আপনার আশেপাশে যদি বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে থাকেন। তাহলে পরিষ্কার পুকুর অথবা নালার পানি প্রথমে ফুটিয়ে নিবেন, তারপরে ঠান্ডা করে ফিট করি অথবা পানি নিষ্কাশন ট্যাবলেট ব্যবহার করবেন। তারপর পানির নিচে তলানি জমার,পর পানি পান করবেন।
৩ সকল খাবার এবং সব ধরনের খাবারই রান্না করার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন।
৪ ময়লা আবর্জনা পানিতে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবেন
৫ আর সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবেন। পায়খানা থেকে এসে নিয়মিত সাবান হাত ধুবেন।
৬ খাবার আগে দুহাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিবেন।
৭ হাত ও পায়ের নখ নিয়মিত কাটবেনকাঁদবেন এবং পরিষ্কার রাখবেন।
পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে কি করনীয়।
পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে কি কি করণীয় তাহলে চলুন জেনে নিন-
১ পানিবাহিত রোগের সমস্যা দেখা দেওয়া মাত্রই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
২ পানি বাহিত আক্রান্ত হলে এসময় বিশুদ্ধ পানি ও তাজা ফলের রস পান করতে হবে।
৩ কলা, ভাত, থুক, সিদ্ধ করা সবজি এবং তরল জাতীয় খাবার খেতে দিতে হবে
৪ খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
৫ প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে যদি আক্রান্ত ব্যক্তি অসুস্থতা পরিবর্তন না দেখেন, তাহলে অতি দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬ থালা-বাসন ব্যবহারের পর অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে রাখতে হবে। এবং ফ্রিজে রাখা খাবার সব সময় গরম করে খেতে হবে।
জেনে নিন কয়টি পানিবাহিত রোগ।
পানিবাহিত রোগ গুলো হল-
> আমাশা
> কলেরা
> ডায়রিয়া
> টাইফয়েড
> হেপাটাইটিস
> পোলিও সহ ইত্যাদি পানিবাহিত কারণে আক্রান্ত হতে পারেন।
পানিবিহিত রোগের লক্ষণগুলো কি কি।
পানিবাহিত রোগের লক্ষণসমূহ গুলো নিম্নে সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হলো-
পানিবাহিত রোগ আমাদের সমাজে একটি সচরাচর বিষয় হলে আমরা গণ্য করে থাকি। দূষিত পানি কারণে এসব রোগে আমরা আক্রান্ত হয়ে থাকি। শুধু দূষিত পানি নয় আমরা আমাদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণের জন্যও আমরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি।
ডায়রিয়া, জ্বর, এবং বিভিন্ন ধরনের ফুলু সংক্রান্ত রোগ এবং লিভারের ক্ষতি হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সকল ক্ষুদ্র জীবাণু মানবদেহে বৃহত্ত প্রভাব আনে।
পানি বাহিত রোগের লক্ষণগুলো হলো পেটে কামড় দেওয়া, হালকা হালকা পেটে ব্যথা করা, পায়খানা রং পরিবর্তন হওয়া, পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া, রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়া, রাতে রাতে জ্বর আসা, মাথা ব্যাথা, মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যাওয়া এছাড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
এসব লক্ষণ গুলো যদি আপনি আপনার শরীরে দেখতে পান তাহলে অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে। এবং চিকিৎসকের প্রাথমিক পরামর্শ নিতে হবে। তাদের নিয়ম অনুসারে চলতে হবে।
প্রিয় পাঠক আশা করি আজকে আমাদের এই আলোচনার মাধ্যমে বিস্তারিত হয়তো জানতে পেরেছেন পানিবাহিত রোগের কারণ, করণীয়, লক্ষণসমূহ সহ সকল বিষয় জানতে পেরেছেন।