ব্রেইন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ।

ব্রেইন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ বিষয়ে আজকে আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব।বর্তমানে অধিকাংশ মানুষেরই ব্রেন টিউমারের সমস্যাটা অধিক হারে দেখা দিচ্ছে। তাই ব্রেন টিউমার সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় আছে সেইসব বিষয় আমি আজকে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব। ব্রেন টিউমার শনাক্তকরণ, ব্রেন টিউমারের অপারেশনের পর করণীয় সহ আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন।


ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ। 

ব্রেন টিউমার যেকোনো বয়সে যে কারো হতে পারে। ব্রেন টিউমার অত্যন্ত জটিল ও মারাত্মক একটি রোগ। অন্যান্য অঙ্গের টিউমার কোন কোষের মধ্যে হয়। কিন্তু ব্রেন টিউমার এমন একটা টিউমার যেটা মানুষের মাথার মস্তিষ্ক ও মগজের মধ্যে হয়। তাই এই ব্রেন টিউমার অপারেশন করাও অনেক ঝুঁকি। আপনি যে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত সেটা কিভাবে বুঝবেন এবং ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো কি কি সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো। 


ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ গুলো হল-

  • ব্রেন টিউমারের লক্ষণ এক একজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। সব থেকে প্রধান ও স্বাভাবিক যে লক্ষণ সেটি হল মাথাব্যথা। আর এই মাথাব্যথা ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করা। মাথা দাঁড়া করলেও নাড়াচড়া করলে মাথা ব্যথা বাড়ে। আর যখন একটু বিশ্রামে থাকে তখন মাথা বাটা একটু কম থাকে। 


  • রোগীর অনেক সময় খিচুনিও উঠে থাকে হাতে অথবা পায়ে খিচুনি শুরু হয়েছে সেই জায়গা থেকে সারা শরীরেও অনেক সময় খিচুনি ছড়িয়ে যায়। আর তখন মাথা ব্যথা তীব্র আ করে ধারণ করে। 


  • অনেক ক্ষেত্রে রোগী চোখে ভালোভাবে দেখতে পায় না। কারণ মস্তিষ্কের ভিতর যে পিটুইটারি গ্রান্ডে টিউমার হলে তখন রোগীর দৃষ্টিশক্তি আগের থেকে অনেকটাই কমে যায়। তখন রোগীর সামনের অংশটুকু ভালোভাবে দেখতে পেলেও তার আর দু'পাশে ভালোভাবে দেখতে পায় না। আর এরকম করতে করতে এক পর্যায়ে রোগী দৃষ্টি হীনতার অন্ধ হয়ে যায়।


  • রোগীর যদি ব্রেনের সামনের অংশে টিউমার হয় তখন রোগীর স্মৃতিশক্তি আগের থেকে কমে যায়। তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করে। 


  • রোগীর মাঝে যদি এই সমস্ত লক্ষণগুলো দেখতে পান তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় যদি চিকিৎসা পায় সেক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণটা একটু কম থাকে। 


ব্রেন টিউমার  সনাক্ত করন।

যে বিষয়গুলো দেখলে আপনি সনাক্ত করতে পারবেন যে আপনি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়েছেন সেগুলো হলো-

  • তীব্র মাথাব্যথা

  • হাত-পা খিচুনি হওয়া

  • নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া

  • আচার-আচরণ স্বাভাবিকের থেকে অস্বাভাবিক

  • তীব্র মাথা ব্যথার কারণে চোখে কম দেখা

  • খিচুনি ও মাথা ব্যথা একসঙ্গে হওয়া

এই ধরনের উপসর্গ যদি আপনি আপনার মাঝে দেখতে পান তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

ব্রেইন টিউমার অপারেশনের পর করণীয়।


  • অপারেশন জগতে সবচেয়ে মেজর অপারেশন হচ্ছে  ব্রেন টিউমারের অপারেশন। এই অপারেশনের পর রোগীর অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং হালকা মাথায় ব্যথা হয়ে থাকে। 

  • ব্রেন টিউমার অপারেশনের পর রোগী কে চিকিৎসকের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রাখতে হয়। এবং রোগীর বর্তমান অবস্থা বুঝে ও তার উপর নির্ভর করে রুহিকে পরিচর্যা ইউনিটের (আই সি ইউ) বা উচ্চ নির্ভরতা ইউনিটে (এইচডি ইউ) এক বা অধি তার বেশি সময়ও রাখা হয়ে থাকে। 

  • তারপর বেশ কিছুদিন ডাক্তারের পরিচর্যা এনিতে রোগীকে রাখতে হয়। 

  • ব্রেন টিউমারের অপারেশনের পর রুগীকে বাসায় আনার পর নিজেকে সবসময় হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করতে হবে। এবং সে যে কঠিন একটা অপারেশনের মাধ্যম থেকে বেঁচে  রয়েছে এই বিষয়টা তার কাছে বা তার পরিবারের  উপস্থাপন করা যাবে না। সব সময় মানুসিক ও   শারীরিক পরিচর্যা রাখতে হবে পরিবারের লোকজনের। 

  • আর অবশ্যই ডাক্তারের দেয়া পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে। এবং ডাক্তারের সাথে সবসময় সক্ষমতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল রাখতে হবে। যাতে করে রোগীর কোন সমস্যা দেখা দিলে সাথে সাথে যেন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারে। সেরকম সব সময় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে

ব্রেন টিউমার হলে কি মানুষ বাঁচে?

ব্রেন টিউমার একটি মারাত্মক রোগ এটা আমরা সবাই জানি। কারন আমাদের অন্য কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যখন টিউমার হয় সেটা মানুষের কোষের মধ্য থেকে টিউমারটা জন্মায়। যে কারণে কোর্স থেকে টিউমারটা অপারেশন করে ফেলে দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু ব্রেন টিউমারের ক্ষেত্রে ঝুঁকির কারণ হচ্ছে যে। আমাদের মাথা যে টিউমারটা হয় সেটা হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক ও মগজের মধ্যে টিউমারটা হয়ে থাকে। 

যে কারণে এটা ব্রেন টিউমার অপারেশন করাও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অপারেশনের সময়ও রোগীর সাথে খারাপ কিছু হয়ে যায়। এর জন্য অবশ্যই বলব মারাত্মক ও ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। তবে এটা বলা ঠিক হবে না যে ব্রেন টিউমার হলেই কেউ বাঁচবে না। কারণ কে কতদিন বাঁচবে এটা সম্পূর্ণ সৃষ্টিকর্তার উপরে নির্ভর করে। তবে মেডিকেল সাইন্স অনুসারে ব্রেন টিউমার যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে আর যদি তার আনুষঙ্গিক কোনো সমস্যা বা রোগ না থাকে সেক্ষেত্রে অপারেশন সাকসেসফুল হয়।

 আবার অনেক ক্ষেত্রে অপারেশন করতে গিয়ে বা ওপার অপারেশনের পরে এর ব্যতিক্রমও ঘটে। তো এই বিষয়ে একমাত্র চিকিৎসকেই সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন যে রোগীর কন্ডিশন  এবং রোগীর সবকিছু কোন পর্যায়ে আছে, ও টিউমার মস্তিষ্কের কোন অংশে আছে, এসব কিছু চিকিৎসক পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত দিতে পারবে রোগী বাজবে কিনা। 

আপনারা হয়তো আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে প্রিয় ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ সমূহসহ ব্রেন টিউমার সংক্রান্ত আরো কিছু বিষয় জানতে পেরেছেন বা আমি আপনাদের জানাতে পেরেছি। ধন্যবাদ-


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url