শীতে চুলের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে চুলের যত্নে ঘরোয়া উপায় এখন চলে এসেছে শীত এই এতে আমাদের দেশে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে আর এর সাথে পাল্লা দিয়ে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় কারন শীতের মেয়ে তো বাধা সে আমাদের চুল শুষ্ক ওনিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে।

এ সময় চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য আমাদের খুব কেয়ারফুল হতে হয় যাতে করে আমাদের চুল সুস্থ এবং সবার রাখার জন্য আমাদের কিছু নিয়ম কানন মেনে চলতে হয় আমরা যে বিষয়ে আলোচনা করব এ সময় চুলের যত্ন নিতে হলে কিছু টিপস মেনে চলতে হবে নিম্নে আমরা এর টিপ সম্পর্কে আলোচনা করলাম আশা করি আমাদের টিপস গুলো আপনাদের পছন্দ হবে আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

নিম্নে কয়েকটি  টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

শীতে চুলের যত্নে ঘরোয়া উপায়


খুশকির সমস্যা নাই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রত্যেকের কম বেশি খুশকির সমস্যা রয়েছে। তবে শীতকালে এ সমস্যা এমন আকার ধারণ করে যে কখনো কখনো মানুষের মধ্যে যাওয়া লজ্জাজনক হয়ে পড়ে। আর এই চুলের যত্ন সঠিক উপায়ে নিতে না পারলে এক সময় দেখা যায়, মাথার চুল ঝরে যেতেশুরু করেছে। যার ফলস্বরূপ মাথায় দেখা দেয় টাক। তাই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে চুল যেন নরম থাকে। বিশেষ করে শীতের সময় ত্বকের মত চুল ও শূষ্ক, রুক্ষ, ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। কারণ চুলের আদ্রর্তা হারিয়ে যায়। এ কারণে চুলের খুশকি ও চুল পড়া বৃদ্ধি পায়। তাই চুলের যত্ন সঠিক উপায়ে নিতে শুরু করুন। এ সব কারণ বিশ্লষণ করে আমাদের চুলের যত্ন নেওয়া জন্য কিছু নিয়ম মেনে চুলের যত্ন নেওয়া উচিত। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু টিপস দেওয়া হয়েছে। আমাদের সাথে থাকুন এবং পুরো আরটিকেলটি ভালো করে পড়ুন।

শীতে চুলের যত্নে কয়েকটি  টিপস

চুলের যত্নে ডিমের কাজ

ডিম আমাদের চুল পড়া বন্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ ডিমে চুল পড়া বন্ধ করার উপাদান যেমন প্রোটিন, আয়রন, সালফার ও ফ্যাট বিদ্যমান। তবে ডিমের সাদা অংশের সাথে কিছু অন্য উপাদান যেমন অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং চুলে ভালো ভাবে ম্যাচেজ করুন। চুল শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন, এতে আপনার  চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল বহু গুণে বৃদ্ধি পাবে।

মাথা ম্যাসেজ

শীতে চুলের যত্নে ঘরোয়া উপায়



মাথার চুল পড়া বন্ধে মাথার চুল  ম্যাচেজের  বিকল্প নাই, শীতকালে আমাদের চুল শুষ্ক রুক্ষ প্রাণীহীন হয়ে যাওয়ার কারণে চুল খুব সহজে উঠে বা পড়ে যায় আরে চুল পড়ে যাওয়া বন্ধে আমাদের চুলের মেসেজ করানো অতি জরুরী তবে প্রতিদিন মেসেজের প্রয়োজন নাই সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনবার মেসেজ করাই যথেষ্ট। এই মেসেজ করার জন্য অবশ্যই আমাদের সামান্য পরিমাণে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে হবে বা বাদামের তেল বা বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের তেল যেমন নবরত্ন তৈল। এই তেল মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে আমাদের চুল গোড়া থেকে মজবুত হয়ে ওঠে । এর ফলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুল দ্রুত লম্বা হয়। এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় আমাদের চুলের সঠিক যত্ন নেওয়ার জন্য তেলের সাথে সামান্য পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে তা দিয়ে আমাদের চুল মেসেজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

চুলের যত্নে অ্যালোভেরা

চুলের গোড়া মজবুত করার জন্য আমলা একটি বিকল্পহীন উপাদান। তাই আমাদের চুল মজবুত করার জন্য আমলার  উপস্থিতি খুবই দরকারি। আমলার রসে অ্যালোভেরা মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং ঐ মিশ্রণ চুলের গোড়ায় লাগান। এছাড়া আমলকির রস চুলে লাগালে চুল ঘন কালো হবে। যদি আপনি চুল ভালো বাসেন তাহলে অবশ্যই আপনি চুলে রিঠা পাউডার ও আমলা লাগান। তবে আমলকি শুধু চুলের যত্নে ব্যবহার হয় তা নয়। এটি খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

দইয়ে লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগান

লেবুর সাথে দই মিক্স করে চুলে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। কারণ দই এবং লেবু দুটোই চুলের জন্য খুব উপকারী। লেবু থেকে রস বের করে তা ভালো করে শেখে দই এর সাথে মিক্স করে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই  টেস্ট টি  হাতের আঙুল দিয়ে ১৫ মিনিট ধরে মাথার চুলে মেসেজ করুন। এই টেস্ট টি  মাথায় এক থেকে দেড় ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন,  তাহলে খুশকি এবং চুল ওঠা দুটোই জন্যই  ভালো ফলাফল দেবে।

ভালো করে আঁচড়ানো


শীতে চুলের যত্নে ঘরোয়া উপায়


মাথায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির জন্য আমাদের নিয়মিত মাথা আছড়ানোর প্রয়োজন। এতে করে চুলের গোড়া মজবুত থাকে এবং চুল পড়া কম হয়। তাছাড়া এখন শীতকাল চলছে এ সময় আমাদের চুল খুব সহজেই রুক্ষ হয়ে যাবে এবং জটলা বেধে যাবে। যার ফলে চুল সহজেই ভেঙ্গে পড়ে যেতে পারে। আর এই সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের নিয়মিত মাথা আছড়ানো উচিত আর  এই কাজটি খুব যত্ন সহকারে করতে হবে।
 

তেল লাগান

চুলে তেল লাগানো একটু ভালো অভ্যাস। এটি আদিকাল থেকে চলে আসছে। আমাদের দাদিদের  কাছে শুনতে পাওয়া যায় যে,  তারা নিয়মিত চুলে তেল লাগাতেন। বর্তমানে সময় আমরা চুলে তেল দিতে চাই না, চুলে তেল লাগালে চুল নরম এবং মাথার সাথে লেগে থাকে তাই। কিন্তু আমরা জানি না যে চুলের গোড়া মজবুত এবং চুল রুক্ষ থেকে বাঁচানোর জন্য আমাদের নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহার করা উচিত। তবে এটি প্রতিদিন না করেও আমরা সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার এ কাজটি করতে পারি এতে করে আমাদের চুল রুক্ষভাবে থেকে মুক্তি পাবে এবং উজ্জ্বল হবে। আরো কিছু বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের চুলের ব্যবহার কৃত তেল দীর্ঘ সময় আমাদের চুলে রাখা যাবে না তাহলে দেখা যাবে যে ধুলাবালি এবং ময়লা লেগে চুল চিটচিটে হয়ে গেছে। তাই আমাদের উচিত রাতে ঘুমানোর আগে মাথায় হালকা গরম তেল মেসেজ করা এবং সকালে বাহিরে যাওয়ার আগে তা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া। এভাবে তেল ব্যবহার করলে দেখা যাবে যে আমাদের চুল মসৃণ উজ্জ্বল ও মজবুত হয়েছে।

ভিনেগার দিয়ে চুল ধুয়া

আমরা যেমন চুলে তেল ব্যবহার করি তেমনি ভিনেগার নামক দ্রব্যটিও আমাদের চুলের জন্য খুব কার্যকরী। এই ভিনেগার আমাদের মাথায় শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার লাগালে যেমন হয় ঠিক তেমনি কাজ করে। এই ভিনেগার এক মগ  পানির সাথে দুই চামচ মিশিয়ে শ্যাম্পু করার পর মাথায় ঢেলে চুল পরিষ্কার করে নিতে হবে এতে করে চুল মসৃণ উজ্জ্বল এবং শক্ত হবে।

আগা ফাটা চুল কেটে ফেলুন

আমাদের পার্লারে অনেক সময় দেখা যায় যে চুলের চুলের আগা ছেঁটে ফেলে দেয়। আসলে এটা একটি কার্যকরী পদ্ধতি। আমাদের মাথায় অনেক সময় ফাটা চুল  দেখা যায়,  তবে এটা শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তাই ফাটা চুলের আগা থেকে ছেঁটে ফেললে চুল খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সুন্দর দেখায়।

চুলে গরম পানি দেওয়া যাবে না

অনেক সময় আমরা গরম পানি দিয়ে গোসল করতে ভালোবাসি। বিশেষ করে এটি শীতকালে লক্ষ্য করা যায়। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে গরম পানি আমাদের চুলের জন্য খুব ক্ষতিকর। গরম পানি ব্যবহার করলে আমাদের চুলের পোড়া নরম হয়ে যায় এবং চুল উঠতে শুরু করে এই সমস্যা থেকে সমাধানের একটাই উপায়  সেটা হচ্ছে যে আমাদের মাথার চুলে কখনোই গরম পানি ব্যবহার করা যাবে না।  চুলে সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। আবহাওয়া যাই হোক না কেন এ পদ্ধতি আমাদের মেনে চলতে হবে।

রুক্ষতা দূর করতে মধু

আমাদের চুলের মধু ব্যবহার করা হচ্ছে ঘরোয়া একটি টোটকা বা উপায়। যা আমাদের চুলের নিষ্প্রাণ হওয়া থেকে বাঁচায় এবং চুল ওঠা বন্ধ করে তবে এটা করার জন্য আমাদের একটু কষ্ট করতে হবে। তা হল একটি তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে মাথায় কিছুক্ষন পেচিয়ে রাখতে হবে, অবশ্যই মাথায় মধু ব্যবহার করার পরে। তাহলে দেখা যাবে যে আমাদের চুল মসৃণ সুন্দর এবং কালো দেখাচ্ছে।

চুলের যত্নে মাস্ক

আমরা যেমন মুখে মাক্স ব্যবহার করি ঠিক তেমনি চুলে ও মাস্ক ব্যবহার করা যায়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের চুলের মাক্স কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে বাহিরের ধুলাবালি থেকে আমাদের চুল সুরক্ষিত থাকে।  ফলে আমাদের চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুল সুস্থ থাকে।

চুল ঢেকে রাখুন

শীতের আবহাওয়া শুধু ত্বকের জন্য নয় চুলের  জন্য খুব ক্ষতিকর।  শীতের আবহাওয়া আমাদের ত্বকের মতো চুলও রুক্ষ শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে যায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদের চুল ঢেকে রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা যখন বাহিরে ঘোরার জন্য বের হয় তখন  অবশ্যই আমাদের চুল ঢেকে রাখতে হবে।  তা না হলে বাহিরের ধুলাবালি চুলের সাথে মিশে চুল চিটচিটে ও জটলা ভাব হয়ে যাবে। ফলে চুল ভেঙে যেতে থাকবে তাই আমাদের চুল ঢেকে রাখা উচিত।


শেষ কথা

চুল মানুষের একটা মূল্যবান সম্পদ, চুল না থাকলে কতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় তা শুধুমাত্র যার নাই সেই জানে। সমাজের নানান ধরনের কুসংস্কার তাঁদেরকে ধাওয়া করে বেড়ায়। তাই আমাদের চুলের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এছাড়া আপনাদের এই লেখাটি সম্পর্কে যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টস করতে ভুলবেন না। 

Next Post Previous Post